মাস্টার প্লান রুপায়নের চ্যালেঞ্জ করছি: অভিষেক ব্যানার্জী

মেদিনীপুর- ঝাড়গ্রাম রাজনীতি

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়িত করার চ্যালেঞ্জ করছি।
হয় এবার নয় নেভার, এবার যদি মাস্টার প্ল্যান না হয় তাহলে জীবনে হবে না, কথা দিচ্ছি ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করার কাজ শুরু করে দেব।
লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে ঘাটালে রোড শো করার পর, জনসভায় এ কথা বললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক এই দিন ঘাটালে শ্রী অরবিন্দ স্টেডিয়ামে কপ্টারে নামেন। এরপর বিবেকানন্দ মোড় পর্যন্ত তিনি রোড শো করেন।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জেতার ব্যবধান ৩ লাখ পার করার কথা তিনি বলেন।
অভিষেক তার বক্তব্যে একাধিকবার ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান হবে বলে চ্যালেঞ্জ করেন।
বিজেপি প্রার্থী হিরন কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, হিরন কয়েক মাস আগে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেয়ার জন্য তার কাছে এসেছিলেন। ঢুকতে দিইনি।
সেই সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ আছে।
কত ধানে কত চাল বেরিয়ে যাবে।
আগে খড়গপুর সামলাও তারপর ঘাটালের কথা ভাবার উপদেশ দেন অভিষেক।
হিরন মাস্টার প্ল্যান এর কথা বলে ঘাটালের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিষেক বলেন।

তিনি এই দিন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানতে চান, ৩ টাকার ডিম কেন আজ ৭ টাকা, ১৭ টাকার কেরোসিন কেন ৭৫ টাকা, ১২০ টাকার চা কেন ২৮০ টাকা?
বড়লোকেরা ব্যবহার করে হীরা অর্থাৎ ডায়মন্ড তার ওপর জিএসটি নেই, আর রান্না করার জিরা, তাতে শতকরা ১৮ ভাগ কেন জিএসটি? কেন বাচ্চাদের খাবারে জিএসটি?
তিনি এই দিন ঘোষণা করেন যারা বাড়ির জন্য আবেদন করেছেন, ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের ব্যাংক একাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে।

অভিষেক চ্যালেঞ্জ করে বলেন, আবাস যোজনার জন্য যদি কেন্দ্রীয় সরকার দেখাতে পারে ১০ পয়সা দিয়েছে, তাহলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন।
বিজেপি ধর্মের নামে রাজনীতি করে। যে যার ধর্ম তার কাছে কিন্তু নির্বাচনে ভোট দিন নিজের অধিকার থেকে।
অভিষেক এই দিন বলেন, ২০২১ সালে বিরোধীরা দল ভাঙ্গানির খেলা খেলে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছিল কিন্তু সেই অশ্বমেধ ঘোড়া আটকে দিয়েছিল মেদনীপুরের মাটি। তিনি বলেন বিজেপি নেতারা যখন এলাকার মানুষের কাছে ভোট চাইতেএলে তাদের দুটি প্রশ্ন করুন।
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়িত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ষাট শতাংশ দেওয়ার কথা, তা দেয়নি কেন?
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি উত্তর কলকাতায তৎকালীন বিজেপি সর্বভারতীয সভাপতি অমিত শাহ র নেতৃত্বে ভাঙ্গা হয়েছিল, ১৪ ই মে ২০১৯ সালে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কেন?
তিনি প্রশ্ন করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর না থাকলে নিজের নাম এবং বাবার নাম লিখতে পারতেন?
আজ থেকে ছয় বছর আগে মেদিনীপুর কলেজিয়েট ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সভা করে বলেছিলেন আমার সরকার কৃষকদের উন্নয়ন করতে বদ্ধপরিকর। সভা থেকে অভিষেক প্রশ্ন করেন পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি সহ বিস্তীর্ণ এলাকাতে দুদিনের বেশি বৃষ্টিতে মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়।
দুদিনের বৃষ্টিতে কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে যায় । কৃষকদের কি উন্নয়ন হয়েছে? কৃষকের স্বার্থে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কেন্দ্রীয় সরকার করবে না বলে তিনি জোর দিয়ে বলেন।

মুখ্যমন্ত্রী আরামবাগে দেব কে পাশে বসিয়ে রাজ্য সরকার মাস্টারপ্ল্যান করবে বলে ঘোষণা করার কথা অভিষেক বলেন।
অভিষেক বলেন, আমি এখানে ক্যামেরার সামনে কথা দিচ্ছি এবার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান করে দেখাবো।
একশ দিনের কাজের
৫৯ লক্ষ শ্রমিকের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
মমতা ব্যানার্জি সরকার ৫৯ লক্ষ শ্রমিকের ৩০০০ কোটি টাকা অ্যাকাউন্টে দিয়েছে ।

বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে লক্ষীর ভান্ডার যদি মমতা ব্যানার্জি দিতে পারেন
তাহলে আমরা ১৫০০ কোটি টাকা খরচ করে ঘাটালের মাস্টার প্ল্যানও করতে পারি ।
আগামী ভোট ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান এর স্বার্থে ভোট, প্রতিবাদের ভোট, প্রতিশোধের ভোট, প্রতিরোধের ভোট।
বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি সম্বন্ধে তিনি বলেন ,দেবকে ই ডি সিবিআই ডেকে পাঠাচ্ছে। শুভেন্দুর নাম না করে তিনি বলেন আর যাকে দেখা যাচ্ছে কাগজের মোড়কে টাকা নিচ্ছে তাকে আরো তোলাবাজি করার সুযোগ করে দিচ্ছে বিজেপি।

দেবকে ভোট দেয়া মানে ঘাটালের মাস্টার প্ল্যান হওয়ার গ্যারান্টি।
তিনি বিরোধীদের বিসর্জন দেওয়ার আহ্বান জানান এবং সভায় উপস্থিত ঢাকিদের বিসর্জনের বাজনা বাজাতে বলেন।
কেন্দ্রীয় সরকার চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার কর তুলে নিয়ে গেছে, তাদের বিসর্জন দেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি ফের চ্যালেঞ্জ করেন যে, বিজেপি ১৭ টা রাজ্যে ক্ষমতায়। ওইসব রাজ্যগুলিতে যদি লক্ষীর ভান্ডার দেয় তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো ওইসব রাজ্যে তারা কোনো টাকা দেয় না।
নরেন্দ্র মোদী আধার আর প্যান কার্ডের লিংক করে টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে বলে তিনি বলেন।

Ghatal News