লালগড় ছাড়তে  নারাজ  হাতির দল  বিপাকে বনদপ্তর

মেদিনীপুর- ঝাড়গ্রাম

ঘাটাল নিউজ ওয়েব ডেস্ক, ১৬ সেপ্টেম্বর :ফের হাতির দল লালগড় এলাকায় প্রবেশ করায় ফসল ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। বনদপ্তর এলাকা থেকে  ছড়ানোর চেষ্টা করলেও  নাছোড়বান্দা হাতির দল লালগড় ছেড়ে যেতে চাইছে না কিছুতেই।  যত বারেই তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কয়েকদিনের মধ্যেই আবার ফিরে আসছে সেই লালগড়ে। হাতি গুলিকে কোনোমতে দলমাতে ফিরিয়ে দিতে পারছে না বনদফতর। বারে বারে হাতি তাড়িয়ে  ল্যাজেগোবরে অবস্থা বনদফতরের কর্মীদের। বুধবার রাতে প্রায় ১০০ টি হাতির একটি দল লালগড় এলাকায় এসে পৌছায়। দলমার এই দলটি পশ্চিম মেদিনীপুরের চাঁদড়ার দিক থেকে লালগড় রেঞ্জে প্রবেশ করেছে বলে বনদফতর সুত্রে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বছর হাতির সংখ্যা বেড়েই চলেছে লালগড় এলাকায়। যার ফলে ধান, সব্জি, সহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে হাতির দল। বারবার এভাবে চাষের ক্ষতি করতে থাকায়  সমস্যায় পড়ছেন লালগড় এলাকার কৃষকেরা । তাদের  অভিযোগ, হাতির দল বারে বারে ফসল নষ্ট করার ফলে চাষে ব্যাপক  ক্ষতি হবে ৷ এভাবে চলতে থাকলে তাদের মত কৃষিনির্ভর  পরিবারগুলিকে ছেলে মেয়েদের নিয়ে পথে বসতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন লালগড়ের  পূর্ণাপানী গ্রামের বাসিন্দা ভূপেন চৌধুরী, রাওতাড়া গ্রামের সন্দীপ মাহাত, রাঙামেটিয়া গ্রামের বাসিন্দা কমল মাহাত সহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা। এছাড়াও সমাজের দরিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী দিন আনা খাওয়া মানুষজনদের অভিযোগ রুজি রুটি টানে রোজদিন জঙ্গলে কাঠ, পাতা তুলতে যেতে হয়। হাতির ভয়ে জঙ্গলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে টান পড়েছে রুজি রুটিতে। এছাড়াও প্রত্যেক বছর ভাদ্র মাসের শেষের দিক থেকে আশ্বিন মাসের মাঝামঝি সময় পর্যন্ত জঙ্গলের অর্থকারী ফসল “কাড়ানি” ছাতু পাওয়া যায়। হাতির দৌরাত্ম্যে ছাতু কুড়োতেও যেতে পারছেন না বলে জানান রাঙামেটিয়া গ্রামের বাসিন্দা জলধর শবর, সঞ্জয় শবরেরা। উল্লেখ্য গত বুধবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাঘরাশোলের জঙ্গলে ছাতু কুড়োতে গিয়ে বছর পয়তাল্লিশের এক  মহিলার হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়। জানা গিয়েছে ওই দলটিকে বুধবার রাতে বনদফতর গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় লালগড় এলাকা দিয়ে কংসাবতী নদী পার করে ড্রাইভ করানোর চেষ্টা করে। বনদফতর ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে লালগড়ের রাঙামেটিয়া, লালগড়, কামরাঙি, লক্ষণপুর, প ডিহা, বান্দী, জঙ্গলখাস এলাকার জঙ্গল গুলিতে প্রায় শতাধিক হাতি রয়েছে। অন্যদিকে ঝাড়্গ্রামের গিধনী রেঞ্জের ডুমুরিয়ার জঙ্গলে প্রায় চৌদ্দ থেকে পনেরোটি হাতি রয়েছে বলে বনদফতর সুত্রে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য  ডুমুরিয়ার জঙ্গলের পাশে গত সাত আগস্ট রেল লাইন পারাপার করতে গিয়ে একটি হস্তি শাবক সহ মোট তিনটি হাতির মৃত্যু হয়েছিল ঞ্জানেশ্বরী এক্সপ্রেসর ধাক্কায়। সেই ঘটনার পর থেকে বারে বারে ওই এলাকায় এই হাতির দলটি ফিরে আসে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে৷ এবিষয়ে ঝাড়্গ্রাম বন বিভাগের ডিএফও বাসব রাজ হোলোচ্ছি বলেন, বনদফতর হাতি গুলির উপর নজর রাখছে। আমরা দেখছি হাতি গুলিকে কিভাবে তাড়ানো যায়। হাতি গুলির মুভমেন্ট দেখে ড্রাইভ করানো হবে।

Ghatal News

Leave a Reply