Site icon Ghatal News

মৃত শিক্ষকের চাকরি পেতে, হন্যে হয়ে ঘুরছে তাঁরই পুত্র।

ঘাটাল ওয়েব নিউজ ডেস্ক, ১৯ সেপ্টেম্বর : স্কুলে শিক্ষকরত অবস্থায় বাবার মৃত্যু, তারপর চাকরির জন্য ৪০ বছর ধরে লড়াই করে চলেছেন তাঁরই ছেলে গৌতম চৌধুরী। বাড়ি দাসপুরের খাঞ্জাপুর গ্রামে। চাকরির জন্য মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ জেলার বিদ্যালয়ের প্রায় সব দপ্তরেই আবেদন করেছিলেন।কিন্তু কোন জায়গা থেকেই কোনো সাড়া পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
১৯৭৬ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান খাঞ্জাপুরের চিত্তরঞ্জন চৌধুরী। মৃত্যুর সময় তিনি দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের সোনাখালি চক্রের কুড়ুনিঘাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর নাবালক ছেলেদের নিয়ে অথৈ জলে পড়ে যান স্ত্রী রেনুকা চৌধুরি। সেই সময় পেনশনের ব্যবস্থাও ছিল না। ১৯৮৮ সালে তার এক ছেলে মাধ্যমিক পাশ করে বাবার চাকরী পাওয়ার জন্য লড়াই শুরু করেন। মায়ের পেনশন এবং ডাই ইন হারনেস এ চাকরির দাবিতে। সেই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুরর কাছেও আবেদন করেছিলেন চাকরি ও মায়ের পেনশনের দাবিতে। অনেক ছোটাছুটির পর ২০১২ সালে গৌতম বাবুর মায়ের পেনশন চালু হয়।তারপর আবার গৌতম বাবু লড়াই শুরু করেন তার চাকরির জন্য। গৌতম বাবু জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর ১৯৭৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় আমাদের বাড়িঘর সব ভেঙে যায় এমনকি সমস্ত কাগজপত্র পড়ার বই সবকিছু ভেসে যায় বন্যায়। আমাদের চাষ করার মত জমিও নেই।অনেক কষ্টে সংসার চালাতে হচ্ছে। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করছি কিন্তু কিছুই লাভ হচ্ছে না।সবাই শুধু আশ্বাস বাণী দিয়ে চলেছেন। আমার বয়সও বেড়ে চলেছে। শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, কর্মরত অবস্থায় কোনো সরকারী কর্মচারী মারা গেলে তার দুবছরের মধ্যে চাকরির আবেদন করতে হয়। যেহেতু দুবছরের মধ্যে আবেদন হয়নি সেক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়মই বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কোনো সরকারী কর্মচারীর মৃত্যুর পর বাড়িতে কেও যদি সাবালক না থাকে তাহলে কি পরিবার চাকরি পাবে না? গৌতমবাবু বলেন যত বাঁধাই আসুক আমি যতদিন পারবো লড়াই চালিয়ে যাবো। মা বিছানা শয্যাশায়ী জীবনের শেষ মূহুর্তেও যদি দেখে যেতে পারতেন ছেলের চাকরি তাহলে খুশি হতেন।

Ghatal News
Exit mobile version