Site icon Ghatal News

চৈত্র সংক্রান্তিতে পালিত হয় চড়ক, ভীড় উপচে পড়ল ঘাটালে

সৌরভ পাল, ১৪ এপ্রিল : চৈত্র সংক্রান্তিতে পালিত হয় চড়ক, চৈত্র মাসের শেষ দিন এই চড়ক পুজো হয়। মূলত এটি বাঙালি হিন্দুর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। নববর্ষের প্রথম দু-তিন দিনব্যাপী অনেক জায়গায় চড়ক পূজার উৎসবও চলে।
চড়ক পুজো কবে কী ভাবে শুরু হয়েছিল তার সঠিক ইতিহাস জানা যায় না। তবে প্রচলিত রয়েছে, ১৪৮৫ খ্রিস্টাব্দে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামের এক রাজা এই পুজোর প্রচলন করেন। রাজ পরিবারের লোকজন এই পুজো আরম্ভ করলেও চড়কপুজো কখনও রাজ-রাজাদের পুজো ছিল না। এটি ছিল হিন্দু সমাজের লোকসংস্কৃতি। পুজোর সন্ন্যাসীরা প্রায় সবাই হিন্দু ধর্মের কথিত নীচু সম্প্রদায়ের লোক। তাই এই পূজায় এখনও কোনও ব্রাহ্মনের প্রয়োজন পড়ে না।

এই পূজার অপর নাম নীল পূজা। গম্ভীরাপূজা বা শিবের গাজন এই চড়কপুজোরই রকমফের। আগের দিন চড়ক গাছটিকে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়। এতে জলভরা একটি পাত্রে শিবের প্রতীক শিবলিঙ্গ রাখা হয়, যা পূজারিদের কাছে ‘বুড়োশিব’ নামে পরিচিত। পতিত ব্রাহ্মণ এই পুজোর পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করেন। পুজোর বিশেষ বিশেষ অঙ্গ হলো কুমিরের পুজো, জ্বলন্ত অঙ্গারের ওপর হাঁটা, কাঁটা আর ছুরির ওপর লাফানো, বাণফোঁড়া, শিবের বিয়ে, অগ্নিনৃত্য, চড়কগাছে দোলা এবং দানো-বারানো বা হাজারা পুজো করা।

এই সব পুজোর মূলে রয়েছে ভূতপ্রেত ও পুনর্জন্মবাদের ওপর বিশ্বাস। পুজোর উৎসবে নানা রকমের দৈহিক যন্ত্রণা ধর্মের অঙ্গ বলে বিবেচিত হয়। চড়কগাছে ভক্ত বা সন্ন্যাসীকে লোহার হুড়কা দিয়ে চাকার সঙ্গে বেঁধে দ্রুতবেগে ঘোরানো হয়। তার পিঠে, হাতে, পায়ে, জিহ্বায় এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে বাণ শলাকা বিদ্ধ করা হয়। কখনও কখনও জ্বলন্ত লোহার শলাকা তার গায়ে ফুঁড়ে দেওয়া হয়। ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার আইন করে বন্ধ করলেও গ্রামবাংলার যে সব অঞ্চল মূলত কৃষিপ্রধান সেখানেই চড়কপূজা উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এখন অার অাগের মত বান গোটা অঙ্গে ফোড়া হয় না। যেমন ঘাটালের বড়মতলা শিব মন্দিরের ভক্তবৃন্দরা ঘাটাল স্কুল মাঠে চড়ক কাঠে উঠে ঘুরতে থাকে এবং কেউ বাতাসা কেউ লজেন্স, ফ্রুটি, পেপসি ছড়াতে থাকে অামজনতার দিকে সবাই হুড়মুড়িয়ে চেষ্টা করে ছড়ানো জিনিস পেতে। বাচ্চাদের ভীড় উপচে পড়ে।

Ghatal News
Exit mobile version